নিজস্ব সংবাদদাতা : অতিরিক্ত পণ দিতে না পারায় এক গৃহবধূকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গ্রামীণ হাওড়ার আমতা থানার পূর্ব গাজীপুর এলাকায়। জানা গেছে, মৃতের নাম সাফিয়া খাতুন(২৭)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭ সালে গদাইপুরের সাইফুদ্দিনের একমাত্র মেয়ে সাফিয়ার সাথে আমতা থানার পূর্ব গাজীপুর কন্ট্রোলগোড়া এলাকার শেখ আজিজের বড়ো ছেলে সানোয়ার আলীর সাথে বিয়ে হয়৷ বিয়ের সময় সানোয়ার আলির একটি কাপড়ের দোকান ছিল। মৃতার বাবা জানান, মেয়ের বিয়ের সময় নগদ ৭০ হাজার টাকা, সাড়ে তিন ভরি সোনা, খাট-আলমারি দেওয়া হয়েছিল। মৃতার ভাই শেখ নিজামুদ্দিনের অভিযোগ, বিয়ের মাস ছ’য়েক পর থেকেই অতিরিক্ত টাকা নিয়ে আসার জন্য শ্বশুরবাড়ির তরফে সাফিয়াকে চাপ দেওয়া শুরু হয়৷ সাফিয়া অনেক সময় শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারের কথা বলতেন। তাঁর অভিযোগ, এরমধ্যে আমরা দিদির শ্বশুরবাড়ি এলাকায় গিয়ে এলাকার মানুষদের সঙ্গে বৈঠক করি। কিছুদিন শান্ত থাকার পর একটি বাইক চেয়ে বসেন জামাইবাবু। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
বহু কষ্ট করে আমরা বাইকও জোগাড় করে দিই। এরপর হঠাৎ দোকান তুলে দিয়ে একটা টোটো কিনে তা চালানোর কাজ শুরু করে। সেই টোটো তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কিনে দেওয়া হয় বলে নিজামুদ্দিনের দাবি। নিজামুদ্দিন বলেন,”ঘটনার দিন অর্থাৎ রবিবার সকালে দিদি তাঁদের বলেন আমার উপর আবার অত্যাচার হচ্ছে। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টা কেটে যাওয়ার পর দিদির শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন আসে যে তাঁর দিদি আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর গিয়ে দেখি দিদিকে একটা ফ্যানে ঝোলানো রয়েছে। এই সময় দিদির শ্বশুরবাড়ি থেকে লোকজনের কথার মধ্যে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়।” মৃতার ভাই শেখ নিজামুদ্দিনের অভিযোগ, অতিরিক্ত পণ না দিতে পারায় দিদিকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পরই উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। রবিবার রাতেই গৃহবধূর ভাই শেখ নিজামউদ্দিন জামাইবাবু সহ দিদির শ্বশুরবাড়ির পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে আমতা থানার পুলিশ। পুলিশ মৃতদেহটিকে উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যেই মৃতার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে মঙ্গলবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।