উচ্চমাধ্যমিকের রিভিউয়ে বাড়ল প্রায় দেড়শ নাম্বার! বিপাকে আমতার দু’ই পড়ুয়া

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। দফায় দফায় বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ, অবরোধের চিত্র উঠে এসেছিল। বহু পড়ুয়ার অভিযোগ ছিল, তাদের ন্যায্য প্রাপ্য নাম্বার দেওয়া হয়নি। সেরকমই অভিযোগ করেছিলেন গ্রামীণ হাওড়ার আমতা-১ ব্লকের উদং উচ্চ বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের দু’ই পড়ুয়া সমীরণ ভুক্ত ও অরিজিৎ কর্মকার। রিভিউ করার পর কার্যত চক্ষুছানাবড়া। একধাক্কায় একজনের বাড়ল ১৫৭ নম্বর, আরেকজনের বাড়ল ১৪৫ নম্বর। এখন কলেজে ভর্তি নিয়ে সংশয়ে দু’ই পড়ুয়া।

জানা গেছে, উদং উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অরিজিৎ কর্মকার ও সমীরণ ভুক্ত দু’জনেই মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত। দু’জনেই অভাবের সংসার থেকে লড়াই করে উঠে আসছে। বরাবরই তাদের উজ্জ্বল মার্কশিট। কিন্তু, কিছুদিন আগে উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় অরিজিৎ ২১৪ ও সমীরণ ২১৭ নম্বর পেয়েছে। রেজাল্ট দেখেই ভেঙে পড়েন দু’ই মেধাবী পড়ুয়া।

সমীরণের কথায়, আমার মাধ্যমিক বা একাদশ শ্রেণীতে যে নাম্বার ছিল তার ভিত্তিতে মূল্যায়ন হলে আমি প্রায় ৮০ শতাংশ নাম্বার পাব নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু, রেজাল্ট দেখে সন্দেহ হয়। আবার অরিজিৎ জানায়, রেজাল্টে দেখি প্রত্যেকটি বিষয়ের থিওরিতে আমায় গড়ে ২৪ নাম্বার করে দেওয়া হয়েছিল। যা আমার প্রাপ্য নয় বলেই সেদিন মনে হয়েছিল। তারপরই দু’ই পড়ুয়া বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক অষ্টপদ ময়রাকে জানান। বুধবার স্কুলে রিভিউয়ের রেজাল্ট নিতে এসে দুই পড়ুয়া দেখেন তাদের বহু নাম্বার বেড়েছে। অরিজিতের বেড়ে হয়েছে ৩৫৯। সমীরণের নাম্বার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৪।

অর্থাৎ, সমীরণ ও অরিজিতের বাড়ল যথাক্রমে ১৫৭ ও ১৪৫ নম্বর। কিন্তু এখন অন্য সংশয়ের সম্মুখীন হয়েছে এই দুই লড়াকু মেধাবী। আগের রেজাল্ট অনুযায়ী কলেজে অনার্সের জন্য আবেদন করতে পারেনি দুই পড়ুয়া। বাধ্য হয়ে সমীরণ বাগনান কলেজে ও অরিজিৎ আমতা রামসদয় কলেজে কর্মাস পাশে আবেদন করে। কিন্তু বর্তমান নাম্বার অনুযায়ী দু’ই পড়ুয়াই অনার্সের জন্য আবেদনযোগ্য।

সমীরণ জানিয়েছে,”খুব ইচ্ছে ছিল হিসাবশাস্ত্রে অনার্স করার। কিন্তু নাম্বার কম থাকায় আবেদন করতে পারিনি। এখন তো আবেদন জমা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কী যে হবে বুঝে উঠতে পারছিনা!” সংসদের ‘ভুল’-এর দায়ে এভাবেই ‘খেসারৎ’ দিতে হচ্ছে অরিজিৎ, সমীরণদের মতো মেধাবী পড়ুয়াদের। কিন্তু, এই ভুলের জেরে অরিজিত, সমীরণদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন!