নিজস্ব সংবাদদাতা : রমেশ, সমীর, সৌমিত্রদের মতোই আসাদুল, গোলাম মোস্তাফাদের এখন কার্যত নিঃশ্বাস ফেলার ফুরসত নেই। গ্রামের সবচেয়ে বড়ো উৎসব বলে কথা, গ্রামজুড়ে আলোর রোশনাই, অজস্র মানুষের ভিড়। হাওড়া জেলার ‘লক্ষ্মীগ্রাম’ আমতা-২ ব্লকের খালনা গ্রামের এক পুজোতে উঠে এলো সম্প্রীতির অনন্য ছবি। পশ্চিম খালনা আমরা সবাইয়ের সর্বজনীন লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে হিন্দুদের সাথে স্থানীয় মুসলমান ভাইয়েরাও সামিল হয়েছেন। নাহ, এ ছবি নতুন নয়, বছরের পর বছর একই ভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করেন সেখ পিন্টু, আব্দুল মীররা। পশ্চিম খালনা আমরা সবাইয়ের সম্প্রীতির এই লক্ষ্মীপুজো এবার ৩৪ বছরে পদার্পণ করল। এবার তাদের বাজেট প্রায় দু’লক্ষ টাকা। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থেকে আনা হয়েছে প্রতিমা। সৌমিত্র, দুধকুমারদের সাথে চাঁদা কাটা, পুজোর আয়োজন করা, সমস্ত কিছু দেখভাল করার যাবতীয় কাজ করেন আসাদুল, গোলামরা। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
বরাবরের মতো পুজোর হোমের কাঠের ব্যবস্থা করা, কলাপাতা কাটা সহ পূজাচারের বিভিন্ন আয়োজন এবারও নিজে হাতে করছেন সেখ মিন্টু। পুজো কমিটির সভাপতি সেখ রাজেশ কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। তবে লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি গ্রামে ফিরেছেন৷ জানা গেছে, পুজো কমিটিতে প্রায় ৫০ জন রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩০ জন হিন্দু ও ২০ জন মুসলিম। পুজোর অন্যতম আয়োজক আসাদুল মল্লিকের কথায়, আমরা ছোটো থেকেই একে অপরকে ভালোবাসি। পূর্ব পুরুষদের দেখেই এই আয়োজনে সামিল হয়েছি। তিনি আরও জানান, বছরভর আমরা একসাথে থাকি। লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন যেমন একসাথে করি, তেমনই একসাথেই মহরমে সামিল হই। পুজো কমিটির সম্পাদক রমেশ করাতি জানান, আমাদের পুজো শুধু সম্প্রীতির, আমাদের সমগ্র পাড়াটাই সম্প্রীতির। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। একে অপরের আনন্দে যেমন পাশে থাকি, তেমন বিপদে-আপদে ছুটে যাই। এভাবেই দশকের পর দশক ধরে সমাজের দ্বারে সম্প্রীতির অনন্য বার্তা নিয়ে এগিয়ে চলেছে পশ্চিম খালনার এই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো।