নিজস্ব সংবাদদাতা : ৯১ বছর বয়সে অবশেষে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ‘ভালোবাসার বাড়ি’কে চিরতরে বিদায় জানিয়ে অনন্তলোকের পথে পাড়ি দিলেন ‘জীবনপুরের পথিক’। সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল জমানার মধ্যেও স্বকীয় সৃষ্টিকে সম্বল করে বাঙালির মনে অন্যতম প্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালকের জায়গা করে নিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। চলচ্চিত্রের সাথে বাংলা সাহিত্য আর রবীন্দ্র সঙ্গীতের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন চিরতরুণ এই শিল্পী। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিমল কর, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো বরেণ্য বাঙালি সাহিত্যিকদের উপন্যাসের উপর বানিয়েছিলেন একের পর এক কালজয়ী ছবি। আর তাতে ব্যবহার করেছিলেন নানা রবীন্দ্র সঙ্গীত। তিনি বরাবরই ব্যতিক্রমী চরিত্রের। কখনোই অযথা খ্যাতি বা প্রচারের আলোর পিছনে ছোটেননি। কাজই ছিল তাঁর পরিচয়। আদ্যপ্রান্ত বামপন্থী হিসাবে পরিচিত মানুষটি চিরকাল নিজ আদর্শে অনড়। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন...
তাইতো ২০১১ সালে বাংলায় যখন পালাবদল ঘটছে, একের পর এক বিশিষ্টজন শিবির বদল করছেন, তখনও নিজ আদর্শে অটুট ছিলেন তরুণ মজুমদার। বরাবরই তিনি আপোষহীন। এমনকি পালা বদলের ভরা সময়েও বামপন্থী গণসংগঠন আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি সামিল হয়েছিলেন। তিনি মানুষকে বড়ো ভালোবাসতেন। তাই তাঁর চলচ্চিত্রের মূল দর্শনই ছিল — ‘মানুষের কথা’। তাই শিল্পীর ইচ্ছা মেনে মানবসেবার উদ্দেশ্যে শিল্পীর নশ্বর দেহ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর পরিবার। বরাবর প্রচারের লাইমলাইটের বাইরে থাকতে পছন্দ করতেন প্রবাদপ্রতিম এই চলচ্চিত্র নির্মাতা। তাই তাঁর শেষ ইচ্ছে মোতাবেক হবে না কোনো শোকমিছিল, দেওয়া হবে না মালাও৷ এভাবেই নীরবে-নিভৃতে চিরকাল বাংলা চলচ্চিত্রের আকাশে ‘চিরতরুণ’ ধ্রুবতারা হয়ে প্রজ্জ্বলিত হবেন শিল্পী তরুণ মজুমদার।