বাগনানের গ্রামে বিজেপি কর্মীর স্ত্রী’কে গণধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেফতার ২

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান থানার বাইনান গ্রামে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে বলেছে জানা গেছে। সূত্রের খবর, শনিবার রাতে নির্যাতিতার স্বামী ও ছেলে বাড়িতে ছিলেন না। বছরখানেক আগে স্ট্রোক হওয়ায় ওই মহিলা বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। অভিযোগ, শনিবার রাতে স্বামী না থাকার সুযোগ নিয়ে বাইনানের ষষ্ঠীতলায় মহিলার বাড়িতে ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতকারী। অভিযোগ, মহিলাকে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতিরা।

তারপর মহিলাকে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে চম্পট দেয়। পরে প্রতিবেশীরা ওই অবস্থায় বছর পঁয়ত্রিশের ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পর রবিবার রাতে উলুবেড়িয়া মহিলা থানায় পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূর স্বামী। সেই অভিযোগে স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবাশিস রানা ও কুতুবউদ্দিন মল্লিক সহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, ধৃতদের নাম জয়নাল মল্লিক ও সাইদ মল্লিক। পুলিস অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪৪৭,৩২৫ এবং ৩৭৬ (ডি) ধারায় মামলা রুজু করেছে।

রবিবার রাতেই পুলিস ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে জয়নাল মল্লিক ও সাইদ মল্লিক নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের সোমবার উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্যাতিতার স্বামী বিজেপির সক্রিয় কর্মী হিসাবে এলাকায় পরিচিত। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির হয়ে সক্রিয় ভাবে কাজ করেছিলেন। ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই তিনি ঘরছাড়া ছিলেন।

অন্যদিকে, অভিযুক্তরা তৃণমূলের নেতা হওয়ায় এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। সোমবার সন্ধ্যায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে আক্রান্ত মহিলাকে দেখতে আসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ,”এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের দু’ই নেতা কুতুবউদ্দিন মল্লিক ও দেবাশিস রানাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি।” তিনি এই ঘটনা নিয়ে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন।

তাঁর অভিযোগ,”নির্যাতিতার স্বামী প্রথমে থানায় গেলেও তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করা হয়।” তিনি বলেন, হাওড়া গ্রামীণের যিনি পুলিশ সুপার তাঁর স্ত্রী শাসকদলের বিধায়ক। তাঁর থেকে কী-ই বা আশা করা যায়। তিনি জানান, এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে ও সঠিক তদন্তের দাবিতে খুব শীঘ্রই উচ্চ আদালত, জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হবে বিজেপি। এই ঘটনা নিয়ে সোমবারই ট্যুইট করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালব্য। এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পুলক রায় জানান,”অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আইন আইনের পথে চলবে। আমরা ওই পরিবারের পাশে আছি। দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”