বাগনানে বাড়ি থেকে উদ্ধার স্ত্রীর রক্তাক্ত মৃতদেহ, মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্বামী

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Updated on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : বন্ধ বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার স্ত্রীর রক্তাক্ত মৃতদেহ। পাশের ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে উলুবেড়িয়ার বাগনান থানার হরিনারায়নপুর এলাকায়। বুধবার সকালে পুলিশ ঘরের তালা ভেঙে রক্তাক্ত গৃহবধূ মিনা বিশ্বাসের (৩৭) মৃতদেহ উদ্ধার করে। অভিযুক্ত স্বামী চন্দন বিশ্বাসকে আটক করা হয়েছে। তিনি বাড়ির মধ্যেই অন্য একটি ঘরে অচেতন অবস্থায় মেঝেতে শুয়ে ছিলেন। তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ওই বাড়ি থেকে একটা কুকুরও উদ্ধার করেছে । জানা গেছে অভিযুক্ত চন্দন বিশ্বাস বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ছাড়াও ঋণদানকারী সংস্থার কাছ থেকেও থেকে বেশ কিছু টাকা ধারদেনা করেছিল। পাওনাদাররা প্রায়ই তাদের বাড়ি আসতেন। বুধবার ও এক সংস্থার লোকজন তার বাড়িতে আসেন টাকা আদায়ের জন্য। তারা দেখেন বাড়িতে তালা মারা। অনেক ডাকাডাকি করলেও কারো কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায় নি। তবে তারা বাড়ির মধ্য থেকে পচা গন্ধ পান।তারা বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের জানালে তারা খবর দেন স্থানীয় মুগকল্যান গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তাদের। জানানো হয় বাগনান থানাতেও। এরপরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বাগনান থানার পুলিশ। তারা দরজা ভেঙে গৃহবধুর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। অভিযুক্ত চন্দন বাগনানের‌ই আন্টিলার বাসিন্দা। তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী রয়েছে। এটি তারা দ্বিতীয় স্ত্রী বলেই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে। তিনি রেলের কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। মাস সাতেক ধরে তিনি বাগনানের হরিনারানপুরে বিশ্বজিৎ মন্ডল নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গেলো মেঝেতে চারিদিকে রক্তের দাগ। মৃতার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পিছনের রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ পুলিশ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মিনার বোন কাকুলি মন্ডল। তিনি জানান বছর তিন আগে চন্দন ও মিনার বিয়ে হয়েছিল। অভিযোগ তারপরে ধীরে ধীরে চন্দনের মুখোশ খুলতে থাকে। বিয়ের পর চন্দন কাজে যেতেন না। মিনা তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলেও কোনও সদুত্তর দিতনা। তাদের সন্দেহ চন্দন রেলে চাকরি করতেন না। এদিকে সংসার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে দেনায় জর্জরিত হতে থাকে চন্দন। এনিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝামেলা শুরু হয়। অভিযোগ প্রতিবাদ করলে মিনাকে মারধর করতো চন্দন। গত সাত মাস আগে তারা বড়ি ভাড়া নেয় বাগনানের মুগকল্যান গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিনারায়ণপুরে। এখানেও তিনি বিভিন্ন জায়গায় থেকে ঋণ করতে থাকে। পাওনাদাররা প্রায়শই তার বাড়িতে আসতেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর বুধবার মিনার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।