নদী বাঁধে ভাঙনের জের, বন্যার আশঙ্কায় দিন গুনছেন হাওড়ার দ্বীপাঞ্চলের মানুষ

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : চারিদিকে জল আর জল। তারই মাঝে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। এযেন একটুকরো সুন্দরবন। নাহ, ছবিটা আদতে সুন্দরবনের কোনো দ্বীপের নয়। এছবি হাওড়া একমাত্র দ্বীপাঞ্চলের। হাওড়া জেলার দ্বীপাঞ্চল ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান গ্রাম পঞ্চায়েত। দ্বীপটি রূপনারায়ণ ও মুন্ডেশ্বরী নদী বেষ্টিত। বছরের বিভিন্ন সময়ে নদীর ভাঙন লেগেই থাকে। আম্ফানের পর সেই ভাঙনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাতেই ঘুম উড়েছে দ্বীপাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের। জোয়ারের জলের তোড়ে পাড় ভেঙে রূপনারায়ণের গর্ভে চলে যাচ্ছে চাষের জমি ও গাছপালা।

পাশাপাশি, নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদীপাড়ের রিংবাঁধ। নদীর পাড়ে থাকা রিং বাঁধের প্রায় ৩০ ফুট ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে চলে গেছে। আর তার জেরেই বন্যার আশঙ্কায় দিন গুনছেন স্থানীয় মানুষ। সূত্রের খবর, আম্ফানের সময়ই চিৎনান এলাকায় রূপনারায়ণ সংলগ্ন বাঁধে বেশ কিছুটা ফাটল দেখা দিয়েছিল। তারপর কোটাল ও জোয়ারের জলে ধীরে ধীরে সেই বাঁধ আরও ভাঙছিল। শুক্রবার রাতের কোটালে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। জানা গেছে, কোটালের জলের তোড়ে চিৎনান দক্ষিণপাড়ার কাছে নদী বাঁধের প্রায় ৪০ ফুট দীর্ঘ ভাঙন দেখা দেয়। আর সেই ভাঙনের জেরেই হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে স্থানীয় ধানক্ষেতে।

তবে জোয়ারের জল নেমে যাওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন চিৎনান দক্ষিণপাড়ার মানুষজন। তবে তাঁদের আশঙ্কা, বাঁধ ভাঙা থাকায় যেকোনো সময় জোয়ারের জল ঢুকে প্লাবিত হতে পারে স্থানীয় এলাকা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে দ্বীপাঞ্চলের কৃষিকাজ। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সাবিনা বেগম বলেন, “আমরা প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ দিয়েছিলাম। ইঁট পাতার কাজও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, লকডাউনের জেরে সেই কাজ বেশ কিছুটা বাকি রয়ে গিয়েছিল। আম্ফানের ফলে সেই অসমাপ্ত কাজই নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে।”

তিনি আরও জানান, “এই মুহুর্তে নদীবাঁধ যে অবস্থায় রয়েছে তা আমাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। সেচ দপ্তরের মাধ্যমে দ্রুত বাঁধ সারাইয়ের কাজ শুরু করার জন্য আমরা ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।” কোটালের জল নামলেও সামনেই যে ঘনিয়ে আসছে বর্ষা, তা-ই বিপদের আশঙ্কাতেই দিন গুনছেন গ্রামীণ হাওড়ার এই দ্বীপাঞ্চলের মানুষ।