নিজস্ব সংবাদদাতা : শাশুড়ি মা’য়েরা একটা দিনের জন্য বছরভর প্রতীক্ষায় থাকেন। কে’না চায় জামাইকে আজকের দিনে হাতপাখায় হাওয়া করে ফলার – মিষ্টি-কচি পাঁঠার মাংস খাওয়াতে।
কিন্তু, এবার লকডাউনের জেরে তা আর সম্ভব হয়নি। শাশুড়ির তরফে জামাইয়ের কাছে নিমন্ত্রণের ফোন গেলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে জামাই শ্বশুরবাড়িতে আসতে নারাজ। তাই শাশুড়ি মা’য়ের মুখ ভার। তা দেখেই বৌমারা তাঁকে দিয়ে বসলেন বৌমাষষ্ঠীর প্রস্তাব।
বৌমাদের এহেন প্রস্তাবকে একবাক্যে স্বাগত জানিয়ে শাশুড়ি মা’ বৌমাদের নিয়েই বাড়িতে আয়োজন করলেন ‘বৌমাষষ্ঠী’র। এমনই অভিনব ঘটনার সাক্ষী থাকল গ্রামীণ হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের মহিষামুড়ি গ্রামের পন্ডিত পরিবার।
আমতার মহিষামুড়ি গ্রামের বাসিন্দা সনৎ পন্ডিত ও নমিতা পন্ডিতের একমেয়ে ও তিনছেলে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে পাশ্ববর্তী ব্লকের খাজুট্টি এলাকায়। প্রতিবার জামাইষষ্ঠীতে মেয়ে-জামাই এলেও এবার সরকারি নির্দেশ মেনে তাঁরা আসবেন না জানিয়েছিলেন।
নমিতা দেবীর কথায়, “জামাই আসবে না বলায় আমার মনটা বেশ কয়েকদিন ধরে খুব খারাপ ছিল। বৌমারা তা দেখেই তাঁদের নিয়ে ষষ্ঠী পালনের বিশেষ প্রস্তাব দেন। তাঁদের প্রস্তাব থেকেই এই আয়োজন।” যথারীতি তিন বৌমার জন্য সকালের মেনুতে ছিল রকমারি মিষ্টি, ফলার সহ বিভিন্ন আয়োজন।
যদিও ষষ্ঠীর ব্রতের কারণে দুপুরের মেনুতে ভাত বা পাঁঠার মাংস ছিলনা, তার পরিবর্তে ছিল লুচি, আলুরদম সহ একাধিক নিরামিষ পদ। শাশুড়ির এহেন উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি তিন বৌমা।
মেজ বৌমা প্রজ্ঞাশ্রী পন্ডিত জানান, “বাঙালি সমাজে সাধারণত জামাইদের নিয়েই জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। কিন্তু, সেই গন্ডির বাইরে গিয়ে মা তাঁর বৌমাদের নিয়ে যে উদ্যোগ গ্রহণ করলেন তা সত্যিই অনন্য।” তিন বৌমার তরফে শাশুড়ির হাতে তুলে দেওয়া হয় শাড়ি।