নিজস্ব সংবাদদাতা : ‘দানেন ন ক্ষয়ং’— খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে এই মহান মানবিক বার্তাকে সঞ্চারিত করতে অভিনব উদ্যোগ নিল গ্রামীণ হাওড়ার বাগনানের লিটিল মিলেনিয়াম নামক একটি বেসরকারি নার্সারি স্কুল। সার্থক, ওয়াজিদ, আরুশির মতো খুদে পড়ুয়ারা বাড়িতে বোকাভাঁড়ে পয়সা জমানোর মতোই দীর্ঘ একবছর ধরে বিদ্যালয়ের ‘বোকাভাঁড়ে’ও সঞ্চয় করত। যদিও সেটা অর্থ নয়, সেখানে জমা হতো বই, খাতা, পেন্সিল, পেন, জ্যামিতি বক্স, স্কেচ পেনের মতো বিভিন্ন শিক্ষাসামগ্রী। ছোটো ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি এই ‘ভাঁড়’ ভর্তির কাজে এগিয়ে এসেছেন পলি দাস, সোমা মেটে, মণিকা পালের মতো বিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীরাও।সারাবছর ধরে ‘Joy Of Giving’ নামক বাক্সে জমানো বিভিন্ন শিক্ষাসামগ্রী স্কুলের তরফে বার্ষিক অনুষ্ঠান মঞ্চে তুলে দেওয়া হল আমতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ স্বপন গিরি জানান, “বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় একশো। প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি বেশ কিছু সামাজিক কর্তব্যও আছে।
আর সেই সামাজিক বার্তা নবপ্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।” বিদ্যালয় কমিটির চেয়ারম্যান কমল বটব্যাল, পাপড়ি পানি ও শিক্ষিকা স্বাতী বোসের উদ্যোগেই মূলত এই উদ্যোগ সম্ভব হয়েছে বলে জানান স্বপন বাবু।এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সম্পাদক তাপস পাল, শিক্ষক অলোক চন্দ্র সহ অন্যান্যরা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির কর্তা অরুণ খাঁ জানান, “আমাদের সংস্থা শিক্ষায় স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে গ্রামীণ হাওড়ার প্রান্তিক পড়ুয়াদের নিয়ে কাজ করে। এই সমস্ত উপাদান দুঃস্থ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। “এই ধরণের উদ্যোগে সামিল হতে পেরে স্বভাবতই খুশি কচিকাঁচারা। খুদে পড়ুয়া রিয়ান্সির কথায়, “বড়ো হয়ে মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চাই।” এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরাও। অভিভাবক রাকেশ মন্ডল জানান, “আগামী প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাতে হবে। আর স্বপ্নস্রষ্টা হিসাবে বিদ্যালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকের শিশুকে আগামীর মহীরূহে পরিণত করতে এই অনন্যসাধারণ উদ্যোগ সত্যিই অভাবনীয়।”