১৪ ই ফেব্রুয়ারীতে পিতামাতাকে দেবজ্ঞানে পুজো করল সঙ্ঘ প্রভাবিত বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থীরা

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Updated on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : ১৪ ই ফেব্রুয়ারীতে পিতামাতাকে দেবজ্ঞানে পুজো করল সঙ্ঘ প্রভাবিত তাঁতিবেড়িয়া সারদা শিশু মন্দির ও সারদা বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থীরা।

” পিতৃ দেবঃ ভব
মাতৃ দেবঃ ভব
আচার্য দেবঃ ভব” – হিন্দু ধর্মের এই মহান ঐতিহ্যকে সুসংহত করতে আজকের দিনটি সকলের থেকে আলাদা ভাবে পালন করল তাঁতিবেড়িয়া সারদা শিশু মন্দির ও সারদা বিদ্যামন্দিরের ছাত্রছাত্রীরা।

এদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবকদের দেবজ্ঞানে পুজো করল। ফুলের মালা, চন্দন, ধান, দুর্বা, গঙ্গাজল, ফুল সহযোগে সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে রীতিমতো দেবতার আসনে বসে পূজিত হলেন অভিভাবক, অভিভাবিকারা।
যখন সব বাঙালি ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালনে মত্ত, তখন অন্যদিকে নিজের বাবা, মা কে দেবজ্ঞানে পুজোর আয়োজন সত্যিই অনবদ্য।

এদিন বিদ্যালয় চত্ত্বরে বিরাট আয়োজন ছিল। ফাল্গুনের চড়া রোদ থেকে বাঁচতে গোটা মাঠে শামিয়ানা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। চারিদিকে তখন উচ্চারিত হচ্ছে-
” ভূমে গরিয়সী মাতা, স্বর্গাৎ উচ্চতর পিতা, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী। গর্ভ ধারণ্যাং পোষ্যভ্যাং পিতুমাতা বিশ্ববে। সর্বদেব স্বরূপায় স্তন্মৈমাত্র নমঃ নমঃ । (মাতৃপূজন মন্ত্র)


” পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহি পরমং তপঃ।
পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রীয়ন্তে সর্বদেবতা।
নমঃ পিতৃচরণ্যেভ্য নমঃ।”( পিতৃপূজন মন্ত্র)
অর্থ্যাৎ গর্ভধারিণী মাতা, জন্মদাতা পিতা স্বর্গ অপেক্ষা বৃহত্তম। এই সনাতন ভাবনা শিশু বয়স থেকেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সঞ্চারিত করাই এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। মূল অনুষ্ঠানটির সাথে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়, এরপর সকলের জন্য সহভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ।

বিদ্যালয়ের সম্পাদক শ্রী তাপস ভট্টাচার্য জানান, ” আজকের পৃথিবীতে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ কমে যাচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বৃদ্ধ বাবা মাকে সন্তানরা অত্যাচার করছে, বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আসলে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের সাথে সাথে, আমাদের সনাতন ভারতীয় সভ্যতার শিক্ষা, মূল্যবোধের, আদর্শের শিক্ষা আজকালকার বাবা মায়েরা দেন না, বা স্কুলগুলোতে দেওয়া হয় না, তাই এসব অপকর্ম ঘটে চলেছে।

তাই আমরা সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতি মেনে, শিশু থেকেই তাদের মধ্যে পিতামাতার প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা, নিবেদনের পাঠ দিচ্ছি, যাতে ভবিষ্যতে তারা নিজেদের আদর্শ সন্তান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।

যদি সব পিতামাতা তাদের সন্তানকে সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির শিক্ষা দেন তাহলে ভবিষ্যতে বৃদ্ধাশ্রম বলে কোন শব্দ আমাদের অভিধানে থাকবে না।” সত্যিই আজকের দিনে খবরের কাগজ খুললেই যেখানে অসহায় বৃদ্ধ বাবা মার উপর সন্তানদের পাশবিক অত্যাচারের খবর প্রতিদিন বার হচ্ছে, সেখানে আর এস এস প্রভাবিত এই স্কুলের অভিনব উদ্যোগ সত্যিই সমাজকে নতুন দিশা দেখাচ্ছে।