নিজস্ব প্রতিবেদক : কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। কিন্তু, মণ্ডপে খুঁটি পোঁতার আগে প্রার্থনা হয়েছে পীরের দরগায়। দীর্ঘদিন ধরে এই অনন্য রীতিই পালিত হচ্ছে গ্রামীণ হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের খালনা বাজারপাড়ার ‘আমার সকল’ পুজো কমিটির মন্ডপে। নবকুমার, অরুণাভ, শৈলেনদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খালনা গ্রামের অন্যতম বড়ো এই লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করেন সইদুল, তাজেল, সাবিররা।
হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক এই শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চলে আসছে বলে জানা গেছে। কোনোকিছুই তাতে ফাটল ধরাতে পারেনি।পুজোর পরিকল্পনা থেকে বাজেট তৈরি, আয়োজন থেকে পুজোর দিনগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ সমস্ত কিছুতেই অভিষেক, শৈলেনদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেন মান্নাফ, সাবিররা।

হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিমরাও পুজোর দিনগুলিতে মন্ডপে আসেন। পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য সেখ মহব্বত আলি বলেন, “আমি এই পুজোর সাথে প্রায় কুড়ি বছর যুক্ত আছি। হিন্দু-মুসলিম সকলে আমরা পুজোর আয়োজন করি। কমিটি যে কাজ দেয় সেই কাজ দায়িত্ব সহকারে পালনের চেষ্টা করি।” এবার এই পুজো ৩৮ বছরে পদার্পণ করল। পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা নবকুমার সানা বলেন, “আমরা সকলের এই সম্প্রীতির পুজো এক অনন্য দৃষ্টান্ত। প্রতিবার আমরা দু’ই ধর্মের মানুষরা মিলে এই পুজোর আয়োজন করি।আর তা দেখতেই বহু দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান।”

তিনি বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কমেছে পুজোর বাজেট, বন্ধ রয়েছে মেলা কিন্তু সম্প্রীতির ছবিটা অটুট।” পুজো মন্ডপের অদূরেই রয়েছে পীরের দরগা সেই দরগা প্রার্থনা করেই শুরু হয় প্রস্তুতি। আবার প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ১০ তারিখে দরগায় পীরের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতেও মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দুরাও সামিল হন। আর এভাবেই সম্প্রীতির আর ভ্রাতৃত্বের এক মিলন ভূমি হয়ে ওঠে খালনার বাজারপাড়া চত্বর।