নিজস্ব সংবাদদাতা : লকডাউনের শুরু থেকেই আমতা বাজারের ভিড় নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এবার করোনার থাবা আমতা বাজার সংলগ্ন নাপিত পাড়ায়। সূত্রের খবর, আমতায় নাপিত পাড়ায় করোনায় আক্রান্ত ২৯ জন। এখন প্রশ্ন উঠছে —গ্রামীণ হাওড়ায় গোষ্ঠী সংক্রমণ কি শুরু হয়ে গেল?
সূত্রের খবর, মেলাইবাড়ী সংলগ্ন নাপিতপাড়া এলাকার একজন ক্ষৌরকর্মী রানিহাটির একটি সেলুন দোকানে কাজ করতেন। লকডাউনের জেরে সেলুন দোকান বন্ধ থাকায় আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন ওই ক্ষৌরকমী। অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পরিযায়ী শ্রমিকদের চুল কাটতে যেতেন এই ক্ষৌরকার। গত দু’সপ্তাহ আগে তার করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে যান।
সেখানে তার নমুনা সংগ্রহ করা হলে এবং তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হোম কোয়ারান্টাইনে না থেকে চারদিকে ঘুরে বেড়ায় তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার পরই সংশ্লিষ্ট এলাকার ২০০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ১২০ জনের ফল আসার পর দেখা যায় ২৯ জনের ফল পজিটিভ।
বাকি ৮০ জনের পরীক্ষার ফল আগামী রবিবার আসার কথা রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই ২৯ জনের মধ্যে ১২ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ও ১৭ জনকে হোম কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এলাকার রাস্তা সিল করে স্যানিটাইজ করার কাজ চলছে। চলছে পুলিশি পাহাড়া। গোষ্ঠী সংক্রমণ প্রসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী নির্মল মাজি জানিয়েছেন, “এখনো আমতার কোথাও গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়নি।”
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, “নাপিত পাড়ায় ৩০ জনের করোনা পজিটিভ বেরিয়েছে। নাপিত পাড়াকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। দিনে দু’বার করে আশা কর্মীরা সেখানে গিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। প্রশাসন কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। আমতা বাজারে আসা মানুষ যাতে করে সমস্ত নিয়ম মেনে বাজার করেন। সেই দিকেও কড়া নজরদারি চালানোর পাশাপাশি বাজারে একটি এন্ট্রি ও একটি এক্সিট পাস তৈরি করে হাতে স্যানেটাইজার দেওয়া হচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, নাপিত পাড়া সহ আমতায় সর্বমোট ৫৩ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে এবং ২০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আমতা শহর জুড়ে প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারি ও মাইকিং চালানো হচ্ছে। বেশিরভাগ দোকানদারই ‘নো মাস্ক,নো সার্ভিস’ প্লাকার্ড ঝুলিয়েছেন। এখন প্রশ্ন একটাই গ্রামীণ হাওড়ার আমতাতে কি গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেল?