নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে মাতৃশক্তির আরাধনা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় মাতৃশক্তির আরাধনা করে সংগ্রামে ব্রতী হয়েছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। আবার অনেক ক্ষেত্রে এলাকার মানুষকে সংগঠিত করতে মাতৃশক্তির আরাধনা করা হত। ঠিক একইভাবে জগৎ জননী মা’য়ের আরাধনা করে স্বাধীনতা আন্দোলনের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন কয়েকজন যুবক। কালের নিয়মে দেশ স্বাধীনতা হয়েছে, পুজোর স্রষ্টারা হারিয়ে গিয়েছেন, কিন্তু সেই পুজো আজও নিজ মহিমায় অটুট। উলুবেড়িয়া-২ নম্বর ব্লকের রঘুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর পশ্চিমপাড়ায় বিপ্লবীদের হাত ধরে শুরু হওয়া সেই পুজো এবার ১৯২ বছরে পদার্পণ করল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এটাই ছিল গ্রাম তথা ওই এলাকার প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো। আজ থেকে প্রায় ১৯২ বছর আগে যা সূচনা হয়েছিল, সেই সময় থেকে রীতি-নীতি মেনে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
গ্রাম সহ গ্রামের পার্শ্ববর্তী মানুষ এই পুজোতেই মেতে ছিলেন সে সময়, কয়েক দশক ধরে গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে পুজো অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে রঘুদেবপুরের বিভিন্ন এলাকা ও পার্শ্ববর্তী গ্রামে এক এক করে বাড়তে থাকে জগদ্ধাত্রী পুজো। এই পুজো রঘুদেবপুরের মানুষের কাছে আদি জগদ্ধাত্রী বা আদি মা নামে পরিচিত। আর সেই সাবেকি রীতিনীতি মেনে এবছরও গ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আদি মায়ের আরাধনা। বংশ পরম্পরায় শ্যামপুরের বেলপুকুর থেকে প্রতিমা তৈরি করতে আসেন শিল্পী। মা এখানে সাবেকি, নেই কোনো থিমের ছোঁয়া। মূলত জগদ্ধাত্রী পুজোর রীতিনীতি মেনে এখানে দুই দিন পূজিত হয় দেবী। পুজায় রয়েছে বলির প্রথাও। তবে এখানে হয়না ছাগ বলি। পরিবর্তে দেবীর উদ্যেশ্যে দেওয়া হয় চালকুমড়ো বলি, ও নানা ধরনের ফল বলি। পুজোয় দেবীকে দেওয়া হয় বিশেষ ভোগও। অন্যান্যবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকলেও এবার বিশেষ কারণে স্থগিত রাখা হয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানান। বিসর্জনের ক্ষেত্রেও রয়েছে বিশেষ প্রথা। স্থানীয়রা জানান, আদি মা’কে সর্বপ্রথম বিসর্জন দেওয়া হয়, তারপর অন্যান্য প্রতিমা বিসর্জন করা হয়।