বাবাকে বাঁচাতে নাবালিকার লড়াই

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : যে বয়সে বাচ্চারা খেলাধুলা পড়াশোনা নিয়ে থাকে সেই বয়সেই সবকিছু ভুলে বাবার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে গ্রাম থেকে উলুবেড়িয়া শহরে টলি ভ্যান চালিয়ে শয্যাশায়ী বাবাকে নিয়ে সাহায্যের আশায় বেরিয়ে পড়ে 11 বছরের ছোট্ট মেয়ে ঝিলিক । উলুবেড়িয়া থানার হিরাপুর দক্ষিণ রামচন্দ্রপুরের সুশান্ত মন্ডল । 50 বছরের সুশান্ত মন্ডল কুড়ি বছর ধরে শারীরিক অসুস্থতায় শয্যাশায়ী শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। পেশায় সুশান্ত একজন শ্রমিক সংসারের উপার্জনের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারনে সংসারে নেমে আসে অভাব অনটন। আর তাই পরিবারের এখন একমাত্র ভরসা এই ছোট্ট ঝিলিক। দাদা ভাই দিদি কেউ নেই । পরিবারের এই বিপদে এখন ভর্সা সেই নিজে। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…

আর তাই এক দিকে চিকিৎসার খরচ অন্যদিকে অভাব-অনটন সংসারটা চালাতে হবে ।যে বয়সে বাচ্চারা খেলাধুলা ও পড়াশোনার আনন্দে শৈশব জীবন কাটায় সেই সময়েই সবকিছু ভুলে সংসার চালানোর খরচ ও বাবার চিকিৎসার খরচ যোগাতে নিজেই সবকিছুর হাল ধরে ছোট্ট ঝিলিক। বাবার টলি ভ্যান নিয়ে সকালে বেরিয়ে পড়ে শয্যাশায়ী বাবাকে নিয়ে ঝিলিক ও তার মা । নিজেই ট্রলি ফ্যান চালিয়ে গ্রাম রামচন্দ্রপুর থেকে দীর্ঘ রাস্তা ধরে শহর উলুবেড়িয়ায় আসে কিছু সাহায্যের আশায় । কখনো কিছু স্বহৃদয় ব্যক্তির দ্বারা সাহায্য মেলে কখনো বা সারাদিনের খাবারটিও জোটে না। খালি হাতে ফিরতে হয় বাড়ি।

সারাদিন ট্রলি ভ্যান চালিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে পা হাতে যন্ত্রণা কাবু করে দেয় তাকে। তারি মাঝে বই নিয়ে একটু পড়তে বসে ঝিলিক আবার ডাক পড়লেই মায়ের সাথে শয্যাশায়ী বাবার কাছে চলে যায় কাজে হাত লাগাতে কেননা বাবা কিছুই করতে পারেন না সবকিছুই করে দিতে হয় তাকে। স্থানীয় একটি স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়াশোনা করে ঝিলিক । সমাজে যদি একটু তাকিয়ে দেখা যায় তাহলে অনেক উদাহরণ স্বরূপ উঠে আসে। যে বাবা-মা ভবিষ্যতের অবলম্বন এর আশায় সন্তানদের মানুষ করে তোলেন সেই সন্তানরাই বাবা-মার কথা ভুলে যায়। কিন্তুু ঝিলিকের এই ছোট্ট বয়সে নিজের দায়িত্বে অবিচল থেকে সেই সব সন্তানদের কিছুটা হয়তো সচেতন করবে। সংসারের বোঝা ও বাবার চিকিৎসার খরচ টানতে পরিবারের একমাত্র ভরসা এই ছোট্ট মেয়েটি এখন থেকেই নেমে পড়েছে জীবনে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে।