ছেড়েছেন পরিবার! নেতাজী প্রেমে মগ্ন বাগনানের কালো মল্লিক

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেশায় রিক্সাচালক, এখন ই-রিক্সা তথা টোটোচালক। দৈনিক রোজগার মেরেকেটে ২০০ টাকা। এই অর্থ ব্যয় করেন একটা উদ্দেশ্যেই। সারা বছর নেতাজী মূর্তি সংরক্ষণ এবং ২৩ শে জানুয়ারি সাড়ম্বরে সুভাষের জন্মদিন পালন। পাশাপাশি ফল , মিষ্টি বিতরণ। এই একটা দিন কাজের ছুটি। মাটির দুকামরার ঘুপচি ঘরে থাকা দৈনিক ২০০ টাকা রোজগার করা মানুষের এহেন ‘বিলাসিতা’র ঠেলায় স্ত্রী – সন্তানও ছেড়ে গেছে তাঁকে। তবু নেতাজি প্রেমে ভাটা পড়েনি এতটুকু।

বাগনান স্টেশনে যত টোটো চলে তার মধ্যে একমাত্র একটি টোটোতেই থাকে নেতাজির ছবি আর বাণী। স্থানীয়দের দাবি, “শুধু বাগনান নয় এমন টোটো গোটা বঙ্গে পাওয়া কঠিন যা নেতাজির ছবি আর বাণীতে সুসজ্জিত।” বাগনানের কাছারিপাড়ার মহিব্বর রহমান মল্লিক পরিচিত কালো মল্লিক নামেই। কাছারিপাড়ার ঐ ঘুপচি ঘরেই সযত্নে সাজানো নেতাজির ছবি ঠিক যেভাবে গেরস্তের ঘরে পাতা থাকে ঈশ্বরের আসন। বাগনান স্টেশনের কাছেই দশফুট উচ্চতার নেতাজির মূর্তিকে এবছরও সোনালি রঙে রাঙিয়েছেন কালো। তিনি মজে থাকেন সুভাষ মাহাত্ম্যে।

আসলে ব্যক্তির মৃত্যু হয় তার আদর্শের কখনও মৃত্যু হয়না — এই বাণীর সার্থক ধারক বোধহয় কালো মল্লিক। রক্ত না ঝরালে যে স্বাধীনতা -আসবেনা তাও উপলব্ধি করেই নেতাজি ‌দেশবাসীর কাছে রক্ত চেয়েছিলেন আর কালো মল্লিক স্বপ্ন দেখেন তার আদর্শ পুরুষের জন্মদিনে একটি রক্তদান শিবির আয়োজন করার, সাধ্যের কারনে সে সাধ এখনও অধরা থেকে গেছে। হয়ত আগামী বছর বা তার ও পরে, কিন্তু হবেই কারন কালো মল্লিকের ভিতর ও বাহিরে ,অন্তরে অন্তরে, হৃদয় জুড়ে যে শুধুই নেতাজি আছেন।

নেতাজীপ্রেমী জানিয়েছেন ,”স্টেশন রোড উত্তরে নেতাজীর যে বিরাট মূর্তিটি আছে সারা বছর তার দেখভালের দায়িত্ব আমিই করি। আজ নয়, বহু দিন ধরেই। তেইশে জানুয়ারি ও পনের‌ই আগষ্ট সাধারণ মানুষের কাছে থেকে হাত পেতে জোগাড় হয় কিছু অর্থ। তাতে পালন হয় নেতাজীর জন্মদিন। এই দু’দিন স্থানীয় হাসপাতালে ও স্কুলে ফল-মিষ্টিও বিতরণ করি।’ এসব কেন? কালোর সাদা উত্তর,”আমার এতেই খুশি।”