নিজস্ব সংবাদদাতা : হাওড়া জেলার আমতা-২ ব্লকের খালনা গ্রাম ‘লক্ষ্মীগ্রাম’ হিসাবে বাংলার বুকে পরিচিত। গ্রাম জুড়ে কয়েকশো ছোটোবড়ো লক্ষ্মীপুজো অনুষ্ঠিত হয়। এবার লক্ষাধিক টাকার বাজেটের বিভিন্ন পুজোগুলোর কেউ অমরনাথকে থিম হিসাবে তুলে ধরেছে কেউবা হাসপাতালকে মন্ডপ ভাবনা হিসাবে উপস্থাপন করেছে। চোখধাঁধানো বিভিন্ন থিম পুজোর মাঝেও আজও নিজ ঐতিহ্য ও রীতিতে অটুট পশ্চিমখালনা দাসপাড়ার চারুময়ী লক্ষ্মীপুজো। খালনা গ্রামের অন্যতম প্রাচীন এই পুজো এবার দেড়শ বছরে পদার্পণ করল। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ১২১৯ সালে নফরচন্দ্র দাসের হাত ধরে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। তখন তালপাতার চাল আর বাঁশের খুঁটি বেধেই পুজো হত। ১৩৬৯ সালে মন্দির তৈরি হয়। সেই মন্দিরেই এখন মা’য়ের আরাধনায় মেতে ওঠেন সকলে। প্রাচীন রীতি মেনে আজও একচালার সাবেকী প্রতিমা। প্রতিমায় ডাকের সাজ। বংশ পরম্পরায় ব্রাহ্মণ, ঢাকি, ডাকের সাজের শিল্পীরা কাজ করে চলেছেন। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
পুজো কমিটির সভাপতি শচীন কুমার দাস জানান,”আমাদের এই পুজোর সাথে জড়িয়ে রয়েছে বহু ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য মেনেই আমাদের বংশপরম্পরায় ব্রাহ্মণ, ঢাকি, ডাকের সাজের শিল্পীরা সামিল হন। কাউকে আলাদা করে প্রত্যেকবার বলতে হয়না।” তিনি জানান, পশ্চিম খালনা দাসপাড়ার ন’টি বাড়ির উদ্যোগে এই পুজো হয়। আয়োজনে খুব বেশি আড়ম্বর কিংবা চাকচিক্য না থাকলেও, থাকে সাবেকীয়ানা ও ঐতিহ্যের ছোঁয়া। এবার পুজোর দেড়শ বছর। তাই স্মরণীয় করে রাখতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি ভোগ বিতরণেরও আয়োজন করা হয়েছে। পুজো কমিটির সম্পাদক রাজকুমার কাঁড়ার জানান,”এবার আমাদের বাজেট প্রায় দু’লক্ষ টাকা। আমরা এই ন’টি পরিবার মিলেই অর্থ সংস্থান করি। কোনো চাঁদা নেওয়া হয়না। তাঁর কথায়, আমাদের সন্ধ্যায় যে আরতি হয় তা দেখার মতো। সারারাত তো বটেই এই দু’দিন অজস্র মানুষ আমাদের মন্দিরে ঐতিহ্যের এই পুজো দেখতে ভিড় জমান।” পুজোর কয়েকদিন আগেই মন্দিরে নতুন রংয়ের প্রলেপ পড়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও পুজোর সকালে মা’য়ের গায়ে সোনার গয়না পরিয়ে দিয়েছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। এবারও ঐতিহ্য অটুট রেখে ঢাক-ঢোলের সাথে সানাইয়ের সুরে মেতে উঠেছে ‘লক্ষ্মীগ্রাম’ খালনার চারুময়ী লক্ষ্মীপুজো প্রাঙ্গণ।