নিজস্ব সংবাদদাতা : দিন পনেরো আগেই সদ্যোজাত শিশুকন্যা আরাধ্যা মাঝির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল গ্রামীণ হাওড়ার শ্যামপুর থানার মরশালে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে একাধিক সংগঠন। এবার সেই ঘটনায় মৃত শিশুর বাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে মৃত শিশুর বাবা সায়ক মাঝি ওরফে বুবুনকে গ্রেফতার করে শ্যামপুর থানার পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশ ৩০২ ও ২০১ নং ধারায় মামলা রুজু করেছে বলে জানা গেছে। ধৃতকে শুক্রবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ শে আগস্ট গভীর রাতে মায়ের পাশ থেকেই ১৫ দিনের সদ্যোজাত কন্যাসন্তান আরাধ্যা মাঝি উধাও হয়ে যায়। বাড়ির পাশেই একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হয় শিশুটির নিথর দেহ। এই ঘটনায় শিশুটির পরিবারের সদস্যদের দিকে অনেকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। সূত্রের খবর, ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে আরাধ্যার পরিবার আগাম জামিনের জন্য আইনজীবীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে শ্যামপুরের তেঁতুলতলা গ্রামের বাড়ি থেকে সায়ক মাঝি ওরফে বুবুনকে গ্রেফতার করে শ্যামপুর থানার পুলিশ।
যদিও এদিন আদালতে যাওয়ার পথে সায়ক নিজেকে নির্দোষ হিসাবে দাবি করে জানান, “ঘটনার দিন গভীর রাত অব্ধি মেয়েকে কোলে নিয়ে বসেছিলাম। মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আমিও পাশে শুয়ে পড়ি। স্ত্রী’র চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারি মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।” এর পাশাপাশি, সায়কের দাবি, “ঘটনার দিন রাতে ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। গ্রীলের গেটে তালা না দেওয়ার সুযোগে কেউ ঘরে ঢুকে মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে আমাদের ফাঁসাতে এই কাজ করেছে।” এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে শ্যামপুর নাগরিক ফোরামের সম্পাদক উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, “প্রকৃত দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। তার সাথে সাথে যাতে আর কোনো কন্যাকে এহেন ঘটনার শিকার না হতে হয় তার জন্য সচেতনতা গড়ে তুলতে সদর্থক ভূমিকা নিক প্রশাসন ও সমাজের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষরা।”