নিজস্ব সংবাদদাতা : উলুবেড়িয়ার মাধবপুরে ১৬ নং জাতীয় সড়ক সংলগ্ন একটি পাইপ কারখানা থেকে বেআইনিভাবে ধোঁয়া ছাড়ার মাধ্যমে বায়ুদূষণ ও স্থানীয় খালের জলদূষণের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন এলাকার মানুষ। লাগাতার এই দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পরিবেশপ্রমী সংগঠন মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির উদ্যোগে মানবন্ধনে সামিল হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি প্রতিবাদপত্রও তুলে দিয়েছিল সংগঠনটি। সেই খবর তুলে ধরেছিল উলুবেড়িয়া সংবাদ। তারপরই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া-১ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাধবপুরের গ্রামবাসী ও কারখানা কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় দু-পক্ষই তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। দীর্ঘক্ষণ এই আলোচনাপর্বে কারখানা কর্তৃপক্ষ কার্যত তাদের দ্বারা দূষণের কথা স্বীকার করে নেয়। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন...
ব্লক প্রশাসন আয়োজিত এই মিটিংয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী এক-দু’মাসের মধ্যেই কারখানা সংলগ্ন খালের জল দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ব্যবস্থা নেবে তারা। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোরও আশ্বাস দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, স্থানীয় এলাকায় গ্রীন বেল্ট ডেভেলপমেন্টেও তারা সক্রিয় ভূমিকা নেবে বলে জানিয়েছে। মাধবপুর পরিবেশ চেতনা সমিতির সম্পাদক জয়িতা কুন্ডু কুন্তি জানান, আমরা শিল্পবিরোধী নই। আমরাও চাই আমাদের গ্রামে শিল্প হোক, কর্মসংস্থান হোক। কিন্তু, কখনোই যেন দূষণ না এলাকার মানুষ ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে গ্রাস করে। প্রতিবাদপত্র পেয়ে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জয়িতা। তিনি আরও জানান, গ্রামের যারা ইতিমধ্যেই দূষণজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও মৌখিকভাবে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানাটির ম্যানেজার পার্থ প্রতিম মুখার্জী বলেন, আমরা দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই কারখানাটির বিরুদ্ধে দূষণের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তাদের অভিযোগ ছিল, রাতের অন্ধকারে কোনো চিমনি ছাড়াই কারখানা সেডের চারিদিক দিয়ে ঘন কালো ধোঁয়া ছেড়ে দেওয়া হয়। এর জেরে মাধবপুর, কাশ্যবপুর, যশপুর, কিশোরপুর সহ বিভিন্ন গ্রাম কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এর জেরে এলাকার মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। নষ্ট হচ্ছে গাছপালা। পাশাপাশি, কারখানার বর্জ্র অ্যাসিড জল কোনো রকম পরিশ্রুত না করেই খালে ফেরা অভিযোগ উঠেছিল কারখানাটির বিরুদ্ধে। এর বিরুদ্ধেই পরিবেশপ্রেমী সংগঠনটির উদ্যোগে প্রতিবাদে নেমেছিল গ্রামবাসীরা। তারপরই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন।