নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কোভিড মোকাবিলায় প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। এবার করোনার হাত থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে একজোট হয়ে এগিয়ে এলেন গ্রামবাসীরা।
অতিমারী পরিস্থিতিতে নিজেদের গ্রামকে রক্ষা করতে ইতিমধ্যেই বিশেষ কোভিড কেয়ার টিম গড়ে তুলেছেন গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের জানবাড় গ্রামের বেশ কিছু মানুষ। এই বিশেষ দলের নাম দেওয়া হয়েছে জানবাড় কোভিড কেয়ার টিম। জানা গেছে, গ্রামে প্রায় হাজার দু’য়েক মানুষের বাস।
করোনা পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষের পাশে থাকতে এগিয়ে এসেছেন এলাকারই বেশ কিছু মানুষ। সকলে মিলে গড়ে তুলেছেন ৩০ জনের একটি বিশেষ দল। দলে যেমন রয়েছেন আঠারোর যুবক তেমনই রয়েছেন চল্লিশের অভিজ্ঞ ব্যক্তি। উদ্যোগে সামিল হয়েছেন এলাকার যুবতী-গৃহবধূরাও।
দলের নেতৃত্বে রয়েছেন এলাকারই বাসিন্দা বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বরূপ গুছাইত। বিশ্বরূপ বাবু প্রতি তিনদিন অন্তর বাড়িতে বাড়িতে ফোন করে প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিচ্ছেন। কোনো অসুবিধা থাকলেই ই-প্রেসক্রিপশন করে পাঠাচ্ছেন। অন্যদিকে, গ্রামের বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে নিয়মিত মাইক প্রচার চালাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। ইতিমধ্যেই চন্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত জানবাড় গ্রামে বসবাসকারী সকল পরিবারের তথ্য নিয়ে এসেছেন এই কোভিড কেয়ার টিমের সদস্যরা। জ্বর হলেই করোনা পরীক্ষা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন এই দলের সদস্যরা।
পাশাপাশি, গ্রামের করোনা আক্রান্ত পরিবারের দ্বারে খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, তাদের চিকিৎসা করানোর কাজও করছেন এই স্বেচ্ছাসেবীরা। স্যানিটাইজেশন করার পাশাপাশি প্রয়োজনে অক্সিজেন সিলিন্ডারও পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এই কোভিড টিমের অন্যতম উদ্যোক্তা শ্রীকৃষ্ণপুর চিত্তরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌমিত্র সামন্ত জানান, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষের পাশে থাকতেই এই উদ্যোগ। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ইতিমধ্যেই ছ’টি অক্সিমিটার, দু’টি থার্মাল গান, পর্যাপ্ত মাস্ক, স্যানিটাইজার ও একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে হয়েছে তিনি জানান।