ভারত ও ব্রিটেনের যৌথ উদ্যোগ শ্যামপুরে তৈরি হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া নৌকা

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : নদী-সাগরে উথালপাতাল ঢেউ, তার মাঝেও ভেসে থাকবে স্রেফ কাঠের তৈরি নৌকা। কয়েক দশক আগেও এই ধরনের নৌকা দেখা যেত। তবে বর্তমানে আর কার্যত দেখা মেলেনা এহেন নৌকার। এবার সেরকমই হারিয়ে যাওয়া নৌকা তৈরি হচ্ছে গ্রামীণ হাওড়ার শ্যামপুর থানার ডিহিমন্ডলঘাটে। লুপ্ত হয়ে যাওয়া নৌকার নকশা তৈরিতে এগিয়ে এলো ভারত ও ব্রিটেন। ভারত সরকার ও ব্রিটেনের একটি সংস্থার আর্থিক সহায়তায় শ্যামপুরের ডিহিমন্ডলঘাটে তৈরি হচ্ছে ৩৫ ফুট লম্বা, ৯ ফুট চওড়া ও ৭-৮ ফুট গভীরতা বিশিষ্ট নৌকাটি। নৌকাটি তৈরি করছেন বছর সত্তরের পঞ্চানন মন্ডল। সহযোগিতায় হাত লাগিয়েছেন তাঁর চার ছেলে অমল, দিলীপ, দীপক ও মনিমোহন। জানা গেছে, বছর তিরিশ আগে এই ধরনের নৌকা বানিয়েছিলেন পঞ্চানন বাবু। হুগলী ও রূপনারায়ণ নদীর নাব্যতা অনেক বেশি থাকায় এই ধরনের নৌকা চলত। সাগর বা নদীর উথালপাতাল ঢেউয়েও নির্বিঘ্নে ভেসে থাকতে সক্ষম এই নৌকা। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…

বিশেষ নকশাবিশিষ্ট এই ধরনের নৌকাকে মূলত মৎসজীবীরা মাছ ধর‍তে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন। যদিও বর্তমানে হুগলী ও রূপনারায়ণ নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় কার্যত লুপ্ত হয়ে গিয়েছে এই ধরনের নৌকা। হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন জলযানকে নতুন করে তুলে ধরার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনের সংস্থাটি। জানা গেছে, সংস্থার গবেষক জিসান আলি শেখ কোলকাতার বিশিষ্ট নৃতত্ত্ববিদ স্বরূপ ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করেন। স্বরূপ বাবুই নৌকার গঠনশৈলীটি ব্রিটেনের ওই সংস্থার কাছে পাঠান। সবদিক খতিয়ে দেখে নৌকা তৈরির অনুমোদন দেয় ব্রিটেনের সংস্থাটি। পাশাপাশি, অর্থও বরাদ্দ করে তারা। জানা গেছে, বিশেষ নকশা দিয়ে নৌকাটি তৈরি। এই ধরনের নকশাবিশিষ্ট নৌকা সহজে ওল্টায় না। এই ধরনের নৌকার নীচে একটি চওড়া কাঠ লাগানো থাকে, যা ‘বিল’ নামে পরিচিত। নৌকার তলদেশ গভীর ও সূঁচালো। খুব সহজেই সমস্ত অতিক্রম করে নৌকা সামনে এগিয়ে যেতে পারে। যদিও নৌকাটি জলে নামানো হবে না বলে জানা গেছে। নৌকাটির স্থান হবে গুজরাটের ন্যাশানাল মেরিটাইম মিউজিয়ামে। শিল্পী পঞ্চানন মন্ডল তাঁর সহযোগীদের নিয়ে জোরকদমে নৌকা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জানান, নৌকাটি তৈরি করতে প্রায় ৪০ দিন সময় লাগবে।