পৃথ্বীশরাজ কুন্তী : “রক্তদান মহৎদান। একফোঁটা রক্তই পারে মুমূর্ষু রোগীকে নতুন জীবন দান করতে” —এই মহান বার্তা নিয়েই সমভূমি থেকে পাহাড়ের পথে প্রচারে সামিল হয়েছেন বছর সাতাশের যুবক রকি মন্ডল। সাইকেলের প্যাডেলে পা রেখেই মানুষকে রক্তদান ও থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে বেড়িয়ে পড়েছেন নদীয়ার তেহট্টের শ্যামনগরের বাসিন্দা রকি। রবিবার সকাল ৯ টায় তেহট্টের বাড়ি থেকে শুরু হয় তাঁর এবারের সফর।
বারাসাত, কোলকাতা, হাওড়া হয়ে সোমবার তিনি এসে পৌঁছান গ্রামীণ হাওড়ার পাঁচলায়। সোমবার গ্রামীণ হাওড়াতেই রাত্রিবাস করে মঙ্গলবার সকালে ফের নিজের পূর্বনির্ধারিত রুটে মেদিনীপুরের দিকে যাত্রা শুরু করেছেন বছর সাতাশের এই যুবক। এভাবেই মাসখানেক ধরে এগিয়ে চলবে তাঁর সচেতনতার রথ। দক্ষিণবঙ্গ হয়ে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা অতিক্রম করে রকি পৌঁছে যাবেন কালিম্পংয়ে। সেখানে গিয়েও মানুষের মধ্যে রক্তদান ও থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে বার্তা পৌঁছে দেবেন নদীয়ার এই সমাজসচেতন যুবক।
রকি জানান, “লকডাউনে আমি রোজা ভেঙে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীকে রক্ত দিয়েছি। রক্তদান যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় তা সেদিনই উপলব্ধি করেছিলাম। তারপরই ঠিক করেছিলাম থ্যালাসেমিয়া ও রক্তদান সম্পর্কে জনমানসে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে বেড়িয়ে পড়ব। সেই মোতাবেক আমার এই সচেতনতার যাত্রা।” তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে নদীয়ার বি আর আম্বেদকর কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে চাষের বাবার সাথে যুক্ত হন।
মাঝেমধ্যেই সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়াই তাঁর নেশা। কখনো সাইকেলে টাইগার হিল আবার কখনো সিকিম পাড়ি দিয়েছেন। তবে এবার শুধু ভ্রমণ নয়, তাঁর মূল লক্ষ্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সচেতনতার বীজ বপন করা। রকির কথায়, “আমাদের সকলের উচিৎ বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করানো। তাহলেই আমরা থ্যালাসেমিয়াকে রোধ করতে পারব। এই বার্তাই দেব মানুষকে।” সোমবার পাঁচলায় তাঁকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন রক্তদান নিয়ে গ্রামীণ হাওড়ায় লড়াই চালিয়ে যাওয়া রেজাউল করিম, শাশ্বত পাড়ুই, মুজিবর রহমানরা।