রাজ্য মিটে রেকর্ড গড়ল উদয়নারায়ণপুরের কর্ণ, লক্ষ্য অলিম্পিক

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : ছোটো থেকেই খেলাধুলার প্রতি তার গভীর ঝোঁক। যখনই সুযোগ পেত তখনই বেরিয়ে পড়ত খেলতে। তার প্রতিভার প্রথম বিচ্ছুরণ ঘটেছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজ প্রতিভা আর কঠোর অনুশীলনকে সঙ্গী করে রাজ্য মিটে রেকর্ড গড়ল উদয়নারায়ণপুরের কর্ণ বাগ। সম্প্রতি সল্টলেকের সাইয়ে অনুষ্ঠিত রাজ্য মিটে ৪০০ মিটার হার্ডেলস দৌড়ে রেকর্ড গড়ল গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর থানার আসন্ডা গ্রামের বছর সতেরোর কিশোর কর্ণ বাগ। কর্ণ জানিয়েছে, ৫৩.২ সেকেন্ড সে ৪০০ মিটার হার্ডেলস শেষ করে আগের রেকর্ডটি(৫৫.৩ সেকেন্ড) ভেঙে দিয়েছে। এতেই অবশ্য ক্ষান্ত হয়নি একরত্তি কর্ণ। এই টুর্নামেন্টের আরও দু’টি ইভেন্টে সে (৪০০ মিটার ফ্ল্যাট ও ৪০০ মিটার মিক্স) প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণ পদক লাভ করেছে। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…

পাশাপাশি, ৪০০ মিটার রিলেতেও সে দ্বিতীয় স্থান করে রৌপ্যপদক জয় করেছে। লড়াইটা কখনোই সোজা ছিলনা। ছোটো থেকেই অভাবের সংসারে বড়ো হয়ে ওঠা। বাবা বিকাশ বাগ রামপুর বাজারে মাছ বিক্রি করে কোনোরকমে সংসার চালান। আসন্ডা বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময়ই প্রথমবার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় কর্ণ। স্কুল লেভেল অতিক্রম করে সার্কেল ও সাব-ডিভিশন অব্ধি পৌঁছে যায় সে৷ পরের বছর আবারও স্কুল ক্রীড়ায় সে সাফল্য পায়। সেবার জেলার গন্ডি অতিক্রম করে রাজ্যস্তরে পৌঁছে যায়। তারপরই নিজেকে অ্যাথলিট হিসাবে গড়ার স্বপ্ন দেখে কর্ণ।

আসন্ডা আদর্শ শিক্ষা সদনে পড়াশোনার পাশাপাশি পাশ্ববর্তী হুগলী জেলার তারকেশ্বরে রাজদীপ কারকের কাছে শুরু হয় অনুশীলন। যতদিন গেছে ততই কঠোর হয়েছে অনুশীলন। একসময় দিনে দু’ঘন্টা অনুশীলন চলত। সেই সময় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা। তারপরই রাজ্য মিটে মেলে সাফল্য। এবছরই আসন্ডা আদর্শ শিক্ষা সদন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে কর্ণ। কর্ণ বাগের কথায়, ছোটো থেকেই খেলাধুলা আমার ভীষণ প্রিয়। কঠোর অনুশীলন আর স্যারেদের কথামতো চেষ্টা চালিয়ে গেছি। তার কথায়, টাকার অভাবে ভালো বুট ও প্র‍্যাক্টিসের সরঞ্জাম কিনতে পারিনি। তবুও হাল ছাড়িনি। কর্ণের চোখজুড়ে একরাশ স্বপ্ন। জুন মাসেই গুজরাটে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ফেডারেশন কাপ। সেখানেও সে ৪০০ মিটার রানে অংশ। তবে যাওয়া-আস সহ বিভিন্ন খরচ তার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমস্ত কিছুর মাঝেই প্রস্তুতিতে বিন্দুমাত্র খামতি রাখতে নারাজ কর্ণ। চলছে কঠোর অনুশীলন। অনুশীলনের ফাঁকে কর্ণ জানায়, তার লক্ষ্য অলিম্পিকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা।