খাঁটি ঘিয়ের নামে ভেজাল ঘি – মালা ব্যানার্জী

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

দেশি ঘিয়ের নাম করে ক্রেতাকে বোকা বানিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে মাখন তেল। ভারতীয় বাজার মাখন তেল দিয়ে তৈরি ঘিয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে। বেশীরভাগ বহুজাতিক সংস্থাগুলিই এই কারবার চালাচ্ছে। গ্রাহক দাম দিয়ে নকল ঘি খেতে বাধ্য হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মাখন তেল এমন একটি জিনিস যা না মাখন, না তেল। মাখন তেল আসলে জল ও ভিটামিন ছাড়া দুধ জাতীয় তৈল পদার্থ, যেটিতে কেবলমাত্র ফ্যাট থাকে। Research Ad market এর 2022 র রিপোর্ট অনুযায়ী দেশ বেশীরভাগ নামকরা কোম্পানিগুলি এই মাখন তেল ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ফ্রান্স সহ ১০-১৫ টি দেশ থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কিলো দরে ক্রয় করে এবং সেই মাখন তেল কিনে তার মধ্যে ভিটামিন, সুগন্ধি এবং প্রিজারভেটিভ মিশিয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কিলো দরে গাওয়া ঘি বা দেশীয় ঘি বলে বিক্রি করছে।
এই নকল ঘি এর বিজ্ঞাপনে লেখা হচ্ছে এই ঘি অনেক বেশি হজমকারী এবং প্রাকৃতিক। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, অনুষ্ঠান বাড়ি ইত্যাদিতে ৯৯% মাখন তেল দিয়েই রান্না করা হচ্ছে এবং জানানো হচ্ছে যে দেশী ঘি বা গরুর দুধের ঘি দিয়ে রান্না করা হচ্ছে। এই নকল ঘি অবশ্যই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। রাসায়নিক মিশিয়ে এই নকল ঘিকে সুস্বাদু করা হয়। মেশিনের মাধ্যমে কাঁচা দুধ কে নানা পদ্ধতিতে প্রসেস করে এই ঘি বানানো হয়। এর মধ্যে কোন রং থাকে না। দেখতে ঘি এর মতন কিন্তু ঘিয়ের কোন গুণ নেই। বিশুদ্ধ ঘি ১০০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করে বানাতে হয়।
দেশে ছোট-বড় মিশিয়ে ৩০০ টি নামকরা কোম্পানি আছে যারা ঘি তৈরি করে । পরীক্ষা করলে হয়তো দেখা যাবে তাদের মধ্যে মাত্র ১০% কোম্পানিই বিশুদ্ধ ঘি তৈরি করে। কোন কোম্পানিকে খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করতে হলে ভারতীয় মানক সংস্থা, আগ মার্ক, FSSAI ইত্যাদি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে প্রযোজ্য সার্টিফিকেট নিতে হয়, তবেই বিশুদ্ধতার প্রমাণ হয়। যেহেতু নকল ঘি বাজারে ভর্তি হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে চটজলদি বাড়িতে পরীক্ষার একটা নিয়ম জেনে রাখা ভালো। অনেক সময় নারিকেল তেল মিশিয়ে দেয় সন্দেহ হলে ঘি কে গরম করে একটু ঠান্ডা হলেই ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। যদি ছাড়া ছাড়া জমাট বাঁধে, তবে নকল যদি একসাথে সবটাই সমান বলে তবে সেটি খাঁটি ঘি।