রঙের বাহার, গ্রামীণ হাওড়ার নিম্নদামোদরের দু’পাশ এখন প্রজাপতিদের স্বর্গরাজ্য

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

ড. সৌরভ দোয়ারী : কেউ ব্যস্ত ফুলের মধু খেতে,আবার কেউ ব্যস্ত পাতার ওপর নিশ্চল হয়ে রোদ পোহাতে।চারিদিক জুড়ে রঙবেরঙের মেলা।

কোনো অভয়ারণ্য কিমবা সাজানো বাগান নয়; গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়নপুর, আমতা, বাগনান,উলুবেড়িয়া ও শ্যামপুরের নিম্ন দামোদর সংলগ্ন দু’পাশ এখন প্রজাপতিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে।

দীর্ঘ লকডাউনের জেরে নদীর ধারে বেশ কিছদিন মানুষের আনাগোনা কমেছিল। এমনকি অনেক ফেরিঘাটও বন্ধ হয়েছিল। তাই নদীর দু’পাশের ঝোপঝাড় গুলি বেড়ে উঠেছিল বাধাহীনভাবে।

তারপর অধিক বৃষ্টিপাতের জেরে এখন নদীতে ভরা জল ফলে নদীর ধারে মানুষের আনাগোনাও অনেকটাই কম। আর এই জোড়া কারণেই শ’য়ে শ’য়ে প্রজাপতিদের উড়তে দেখা যাচ্ছে দামোদর সংলগ্ন এই অঞ্চলগুলোতে।

সাধারণত অন্যান্য বছর এই সময় এই জায়গাগুলিতে এতো সংখ্যায় প্রজাপতি দেখা যায় না। কিন্তু এবছর যেন তারা বাঁধনছাড়া। সপ্তাহখানেক ধরে দামোদরের দু’পাশে পঞ্চাশটিরও বেশি প্রজাতির প্রজাপতি খুঁজে পাওয়া গেছে।

উল্লেখযোগ্য ঘটনা, প্রায় প্রতিটি প্রজাতির খুব বেশি সংখ্যায় প্রজাপতিদের উপিস্থিতি। ছোট অঞ্চলে এতো বিপুল সংখ্যক প্রজাপতির সমাহার এবার অবাক করার মত।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চাষবাস ও ইটভাটার থাকায় উদয়নারায়নপুর ও শ্যামপুরে কিছুটা কম প্রজাপতি লক্ষ্য করা যায় আমতা, বাগনানের তুলনায়। তবে এবার প্রায় সর্বত্রই একই দৃশ্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

শুধু পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতিদের আনাগোনাই নয় সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলিতে তাদের অবাধে জীবনচক্র সম্পন্ন করতেও দেখা যাচ্ছে। একাধিক গাছে প্রজাপতিদের ডিম, লার্ভা ও পিউপাদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

অত্যধিক সংখ্যায় প্রজাপতিদের এই অবাধ বিচরণের কারণ হিসাবে এইসব এলাকার দূষণ হ্রাসের কথাও পরোক্ষভাবে বলা যায়।

তবে পরবর্তীক্ষেত্রে মানুষের সক্রিয়তা বাড়লে কিমবা নিম্ন দামোদরের বিভিন্ন অঞ্চল জলমগ্ন হলে প্রজাপতিদের সংখ্যা বৈচিত্র্য কমবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।

লেখিক পরিচিতি

ড. সৌরভ দোয়ারী বিশিষ্ট প্রজাপতি গবেষক ও পরিবেশবিদ