শ্রীরামকৃষ্ণের স্মৃতিধন্য মুক্তকেশী মা, মা’য়ের কৃপায় ধন্য নদীপাড়ের ‘গ্রাম’

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের পদধূলি পড়েছে। আবার এই মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে দাহ করা হয়েছিল ঠাকুরের মা’কে। আবার সেই মন্দিরের পাশেই নিবাস দক্ষিণেশ্বর শিব অনাদিলিঙ্গের। এমনই এক পবিত্র স্থান আলো করে রয়েছেন মা মুক্তকেশী। দক্ষিনেশ্বর কালীমন্দির থেকে প্রায় ঢিল ছোড়া দূরত্বে সুপ্রাচীন জনপদ আড়িয়াদহ। হাঁটা পথে দশ মিনিটে নির্জন আড়িয়াদহ লঞ্চ ঘাটের পাশেই প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন মন্দির অবস্থান করছে।

মন্দিরের বাইরের ফলকে লেখা স্থাপিত সন নির্দেশ অনুযায়ী মুক্তকেশী মন্দির দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ও ১৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত অর্থাৎ ১২৩২ বঙ্গাব্দে। ঘটনা হল এই মুক্তকেশী কি কারনে মুক্তকেশী তা জানা যায় না। তবু তাঁর কৃপা না কি অপার। এলাকার মানুষজনের দাবি তেমনটাই। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবাররা দু’শো বছরের বেশি সময় ধরে এই মন্দিরের দেখাশোনা করছেন। মুক্তকেশী মন্দির , মা অভয়ার মন্দির ও ঘাট, বাণরাজাদের তৈরি সুপ্রাচীন শিব মন্দির এখানে একইসঙ্গে অবস্থান করছে। প্রাচীনকালে এই জায়গাটার নাম ছিল শোণিতপুর। বাণরাজার রাজত্বের মধ্যে ছিল ওই গ্রাম। বাণরাজাই নাকি সেখানে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শিবলিঙ্গ। সেই শিবলিঙ্গের নাম অনুসারে জায়গাটার নাম দক্ষিণেশ্বর।

পুরাণ অনুযায়ী, বানাসুরকে নিয়ে কিংবদন্তি আসামের শোনিতপুর (বর্তমানে যার নাম তেজপুর) সেখানে থেকে হিমাচলের কিন্নর কৈলাশ অব্ধি ছড়িয়ে এমনকি বাংলাতেও আছে। পুরাণসমূহে যে বাণ রাজার উল্লেখ, তাঁর রাজ্য উত্তরবঙ্গে ছিল এবং তিনি মহাভারতের সমকালীন, অন্তত সাড়ে তিন হাজার বছর আগেকার লোক। কিন্তু সেই বাণরাজা আর এই বাণরাজ এক কি না জানা যায় না। বাণ একটা জাতির নামও হতে পারে। এক বানাসুরের মেয়ে উষা তো শ্রীকৃষ্ণের নাতি অরুন্ধতীর স্ত্রী। সেই বিয়ে নিয়ে এতটা ঝামেলা হয় যে শিব আর কৃষ্ণের মধ্যে এক ভীষণ যুদ্ধ লেগে যায়। একটি কিংবদন্তি অনুযায়ী মহারানী যখন দক্ষিণেশ্বর কে পুজো করতে যেতেন তখন অনেক সময় গঙ্গায় বান আসায় রানীর প্রার্থনায় বর পান যে বাণের সময় তার স্থান প্লাবিত হবে না। কাকতলীয় ভাবে আজও হয়ত ভৌগোলিক কারণেই গঙ্গায় বান এলেও আড়িয়াদহ প্লাবিত হয় না।